ইসলাম প্রচার ও প্রসারে বঙ্গবন্ধু

আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন

by bdnewsinsider

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানেই বাঙালি-বাংলাদেশ, দেশের প্রতিকৃতি-অভিন্ন সত্তা, বাঙালির ইতিহাসের মহানায়ক, মুক্তিকামী মানুষের শক্তি-সাহস-ঐক্যের প্রতীক, অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা, হর্ষ-বিষাদের মহাকাব্য, তিমিরবিনাশী অনমনীয়-অনন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা-রূপকার, একটি চেতনার বাতিঘর। তার অবিনশ্বর চেতনাকে ধারণ করে এদেশবাসী এগিয়ে চলেছেন অসাম্প্রদায়িক, শোষণÑদারিদ্র্যমুক্ত, সুশিক্ষিত, উন্নত, ডিজিটাল-স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের মহাসড়কে। তার মৃত্যুঞ্জয়ী আদর্শ আগামীতে শুধু বাঙালিকে নয়- সারাবিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের হয়ে কথা বলবে।

ইসলাম গতানুগতিক কোনো ধর্ম নয়, পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। ইসলামের সেই মহিমাকেই প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, হজরত শাহজালাল (রা.), হজরত শাহপরাণ (রা.), হজরত খান জাহান আলীসহ (রা.) যারাই এদেশে ইসলামের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেছেন তারা সবাই এসেছেন বাগদাদ, ইয়েমেন কিংবা আরবীয় কোনো না কোনো দেশ থেকে। জানা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্বপুরুষরাও এ দেশে ইসলাম প্রচারের কাজে আগমন করেন। বঙ্গবন্ধুর পূর্বপুরুষ শেখ আউয়াল ইসলাম প্রচারের উদ্দেশে হজরত বায়েজিদ বোস্তামীর (রা.) শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তার সঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশে আসেন। পরবর্তী সময়ে তারই উত্তর পুরুষরা বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় বসতি স্থাপন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন ইসলাম প্রচারক শেখ আউয়ালের সপ্তম বংশধর। বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন একজন সুফি চরিত্রের অধিকারী অন্যতম ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন উদার চেতনার অধিকারী একজন খাঁটি মুসলমান। তার স্বল্পকালীন শাসনামলে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণার্থে গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং ভৌত অবকাঠামোগত পদক্ষেপ যেমন ছিল, তেমনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের বিষয়াদি বিবেচনায় রেখে তিনি ইসলাম প্রচার ও প্রসারে গ্রহণ করেছিলেন বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকরী নানা ব্যবস্থা। তিনি যেমন একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, তেমনি বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের স্থপতিও তিনিই। এ দুটি অনন্য সাধারণ অনুষঙ্গ বঙ্গবন্ধুর জীবনকে দান করেছে উজ্জ্বল মহিমা। বাংলাদেশকে সব ধর্মের মানুষের জন্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট। তিনি কখনো ইসলামকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেননি।

বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দক্ষিণ-পশ্চিম দিক ঘেঁষে একটা সরু খাল চলে গেছে, যেটি বাইগার নদী ও মধুমতী নদীর সংযোগ রক্ষা করে। এই খালের পরেই ছিল বড় কাচারি ঘর, আর এই কাচারি ঘরের পাশে বঙ্গবন্ধুর পড়ার ঘর। এখানে তাকে মাস্টার, পণ্ডিত ও মৌলভী সাহেব পড়াতেন। মৌলভী সাহেব বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে জায়গির থাকতেন এবং তাকে পবিত্র কোরআন, নামাজ, রোজা ও আরবিসহ বিভিন্ন মাসআলা-মাসায়েল, ইমান-আকিদার শিক্ষা দিতেন। এ জন্যই তিনি শিশুকাল থেকে ইসলামের আলোকে উজ্জীবিত একজন মানুষ। ধর্মপ্রাণ মুসলিম জননেতা। তার কথায় কাজে সর্বদা আল্লাহর নাম বা ইনশাআল্লাহ থাকত।

১৯৭২ সালে পাকিস্তানের জঙ্গিশাহির জিন্দাখানার অন্ধ প্রকোষ্ঠে নারকীয় বন্দিজীবন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে এসে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল এক জনসভায় তিনি বলেছিলেন, আমার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, তোমরা আমাকে মারতে চাও মেরে ফেলো। আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান। মুসলমান একবার মরে বারবার মরে না। নানাবিধ কাজের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ইসলামের মহান সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সদ্য স্বাধীন দেশের নাগরিকদের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য এবং সুন্দর একটি ইসলামি পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে মদ, জুয়া, হাউজি ও ঘোড়দৌড় নিষিদ্ধ করেন। বঙ্গবন্ধু মহানবী (সা.)-এর শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে রেসকোর্স ময়দানে অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে সে জায়গায় ফলবৃক্ষ রোপণ করেন এবং রেসকোর্স ময়দানের নাম রাখেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা, প্রচার-প্রসার ও এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সামগ্রিক জীবনকে ইসলামের কল্যাণময় স্রোতধারায় সঞ্জীবিত করার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক অধ্যাদেশ জারি করেন। বায়তুল মোকাররম সোসাইটি ও ইসলামিক একাডেমি নামক তৎকালীন দুটি সংস্থার বিলোপ সাধন করে এই ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন জন্মলগ্ন থেকে তার মহান উদ্দেশ্য সামনে রেখে বাংলাদেশে ইসলামি চেতনা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রকাশনা, গবেষণা, অনুবাদ ইসলামী বিশ্বকোষ, সংস্কৃতি ও দাওয়াহ, ইসলামিক মিশনসহ ১৪টি বিভাগে এ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত পবিত্র কোরআনের বাংলা তরজমা, তাফসির, হাদিস গ্রন্থের অনুবাদ, রাসুলের (সা.) জীবন ও কর্মের ওপর রচিত ও অনূদিত গ্রন্থ, ইসলামের ইতিহাস, ইসলামি আইন ও দর্শন, ইসলামি অর্থনীতি, সমাজনীতি, সাহাবি ও মনীষীদের জীবনী ইত্যাদি নানা বিষয়ে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান ঢাকার প্রধান কার্যালয়সহ সারা দেশের ৬৪টি জেলা কার্যালয়, আর্তমানবতার সেবায় ২৮টি ইসলামিক মিশন, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির মাধ্যমে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। বৃহত্তর কলেবরে ২৮ খণ্ডে ইসলামী বিশ্বকোষ, ১২ খণ্ডে সিরাত বিশ্বকোষ প্রকাশ করে ধর্মতাত্ত্বিক জ্ঞানের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছে।

বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় সীরাত মজলিশ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। সীরাত মজলিশ ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে রবিউল আউয়াল মাসে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম বৃহত্তর আঙ্গিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদ্‌যাপনের কর্মসূচি গ্রহণ করে। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শবেবরাত ও শবেকদর উপলক্ষে সরকারি ছুটি এবং সরকারিভাবে এই পবিত্র দিবসটি উদ্‌যাপনের জন্য সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুই ব্যবস্থা করেন। উল্লিখিত দিবসগুলোর পবিুত্রতা রক্ষার্থে সিনেমা হল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন। সরকারপ্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু নিজেই বায়তুল মোকাররম মসজিদ চত্বরে মাহফিলের শুভ উদ্বোধন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সর্বপ্রথম বেতার ও টেলিভিশনে গুরুত্বের সঙ্গে পবিত্র কোরআন ও তার তাফসির এবং অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রচারের সুব্যবস্থা করা হয়। প্রচারমাধ্যমে সে ধারা আজও অব্যাহত।

বঙ্গবন্ধু ইসলামি আকিদাভিত্তিক জীবনযাপন ও ইসলামি শিক্ষা বিস্তারের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড পুনর্গঠন করেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড পুনর্গঠন করার ফলে আজ বাংলাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে।

বিশ্ব ইজতেমা শাান্তিপূর্ণভাবে পালন করার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম স্থায়ী বন্দোবস্ত হিসেবে তুরাগ নদীর তীরবর্তী জায়গাটি প্রদান করেন। সেই থেকে অদ্যাবধি তাবলিগ জামাত ওই স্থানে বিশ্ব ইজতেমা পালন করে আসছে। টঙ্গীতে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক এই স্থান বরাদ্দের বদৌলতেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান আজ এখানে সমবেত হয়ে দ্বিতীয় বৃহৎ সম্মেলন করে যাচ্ছেন।

তাবলিগ জামাতের মারকাজ বা কেন্দ্র নামে পরিচিত কাকরাইল মসজিদের সম্প্রসারণ করে রমনা পার্কের অনেকখানি জায়গার প্রয়োজন যখন দেখা দেয়, তখন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নির্দ্বিধায় কাকরাইল মসজিদকে জমি দেওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকে করে দেন। রাশিয়া তথা সোভিয়েত ইউনিয়নে বিদেশ থেকে কেউ গিয়ে ইসলাম প্রচারের সুযোগ পেত না। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার সুসম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ইসলাম প্রচারের জন্য সর্বপ্রথম তাবলিগ জামাতের একটি দল রাশিয়ায় প্রেরণের ব্যবস্থা করেন।

১৯৭৩ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু আরব বিশ্বের পক্ষে সমর্থন করেন এবং এ যুদ্ধে বাংলাদেশ তার সীমিত সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ অবদান রাখার চেষ্টা করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থনে ১ লাখ পাউন্ড চা, ২৮ সদস্যের মেডিকেল টিমসহ একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী পাঠানো হয়। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্দেশে ১৯৭৪ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) অধিবেশনে যোগদান করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়েই বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বাংলাদেশের স্থান করে নেন। ওআইসি সম্মেলনে যোগদান করে ইসলাম ও বাংলাদেশ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু মুসলিম নেতাদের সামনে যে বক্তব্য তুলে ধরেন এতে আরবসহ মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশের ভাব উজ্জ্বল হয় এবং মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে সুদৃঢ় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে ওঠে।

পাকিস্তান আমলে হজযাত্রীদের জন্য কোনো সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা ছিল না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে প্রথম হজযাত্রীদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করেন এবং হজযাত্রীদের জন্য ভ্রমণ কর রহিত করেন। ফলে হজ পালনকারীদের আর্থিক সাশ্রয় হয়।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে পাকিস্তান বেতার ও টেলিভিশনে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, আমরা ইসলামে বিশ্বাসী নই। এ কথার জবাবে আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য আমরা লেবাসসর্বস্ব ইসলামে বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাসী ইনসাফের ইসলামে। আমাদের ইসলাম হজরত রাসুলে করিম (সা.)-এর ইসলাম, যে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র। ইসলামের প্রবক্তা সেজে পাকিস্তানের মাটিতে বারবার যারা অন্যায়, অত্যাচার, শোষণ-বঞ্চনার পৃষ্ঠপোষকতা করে এসেছেন আমাদের সংগ্রাম সেই মোনাফেকদের বিরুদ্ধে। যে দেশের শতকরা ৯৫ জনই মুসলমান সে দেশে ইসলামবিরোধী আইন পাসের কথা ভাবতে পারে তারাই, ইসলামকে যারা ব্যবহার করেন দুনিয়াটা ফারস্থা করে তোলার কাজে। সে সময় বঙ্গবন্ধু তার এই অমূল্য বক্তব্যে রাসুল (সা.)-এর ইসলামের সুমহান শিক্ষা, অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার, বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে ইসলামের আপসহীন অবস্থান, প্রতারণা, প্রবঞ্চনা ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে ইসলামের শিক্ষার প্রতি তার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন, ‘মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ।’ আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা থেকেই তিনি এমন উচ্চারণ করেছিলেন।

ইমসলামের প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী অবদানের কথা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ইসলাম সব মানুষের সার্বিক জীবনের পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে যে যখনই এসেছে বা আসতে চেয়েছে, তাকেই মহান সৃষ্টিকর্তা দুনিয়া ও আখিরাতে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের আলোকে উজ্জীবিত হয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু ইসলামের উদারনৈতিক অসাম্প্রদায়িক সাম্য ও মৈত্রীর চিরন্তন ভিত্তিকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন। স্বাধীন বাংলাদেশে ইসলামি অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে যে অবদান রেখেছেন, তা সমকালীন ইতিহাসে বিরল। আসুন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ নয়- ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্যই হচ্ছে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে বিকশিত হয়েছিল বলেই তিনি বাংলার মানুষের নয়নের মণি।

লেখক: পুলিশ সুপার, নৌ পুলিশ, সিলেট অঞ্চল

একই লেখা

Leave a Comment